রোববার সকালে মাত্রাতিরিক্ত গ্যস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক সেমিনারে এ সব কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির চিকিৎসকরা। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্যাস্ট্রোএন্টারলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজিবুল আলম।
উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন এবং জীবনাচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যনসারসহ না জটিল রোগ প্রতিধোধ করা সম্ভব। অতিমাত্রায় মোবাইল আসক্তি ও অতিরিক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে।’
করোনা সংক্রমণ ও ঠান্ডা জনিত অসুখ বৃদ্ধি,পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওষুধের দাম
অধ্যাপক রাজিবুল আলম বলেন, ‘গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের বড় অংশ বিক্রি হচ্ছে ব্যবস্থাপনাপত্র ছাড়া। রোগীর একটু পাতলা পায়খানা, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথাসহ নানা জটিলতা দেখা দিলে ফার্মেসি দোকানিরা গ্যাস্টিকের ওষুধ দিচ্ছেন। এই ক্ষেত্রেই একটু পানি পান করালে বা হালকা কিছু ওষুধ ব্যবহার করলে এই সমস্যা সমাধান করা যেত।
‘দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থাপনাপত্র ও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার, স্মৃতিভ্রমের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম কমে আসতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘রোগীর প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই এ ধরনের ওষুধ ব্যবস্থাপনা লিখতে হবে, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় অতিমাত্রায় এর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। যত্রতত্র এবং অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ব্যবহার কমাতে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে।’
এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যখন ইচ্ছা তখন ওষুধ কেনা সম্ভব নয়। বছরে তিনবার গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ কিনতে পারবেন। আপনি কিনতে পারবেন না। কারণ ওখানে সবকিছু রেকর্ড থাকে আর এর বিল দেয় বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান। ‘যদি আমাদের দেশে স্বাস্থ্যবীমা থাকত, ওষুধ বিক্রি ও কেনা এবং তদারকি করা সম্ভব হত, তাহলে এই অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হত।’
সেমিনার আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররাফ হোসেন, উপউপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইদুর রহমান, ফার্মাকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শরবিন্দু কান্তি সিনহা, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সবুজ প্রমুখ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।